Friday, মার্চ ২৯, ২০২৪

চুরি যাওয়া অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব, বলছেন গভর্নর

 

কুচক্রিদের আতাতে বছর তিনেক আগে রিজার্ভ চুরির আলোচিত ওই ঘটনায় বিভিন্ন দেশে পালিয়ে থাকা জড়িত এবং সুবিধাভোগী বা যারা লাভবান হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে মোট ৬৬ দশমিক ৫ মিলিয়ন (৬ কোটি ৬৫ লাখ) ডলার ক্ষতিপূরণ আদায়ের মামলা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির। তিনি জানিয়েছেন, রিজার্ভ চুরির মামলা আমলে নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের আদালত। গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে যে মামলা হয়েছে, তাতে জড়িতদের আসামী করা হয়েছে। তাই, চুরি যাওয়া অর্থ ফিরে পেতে বেশিদিন লাগবে না।

সূত্র জানিয়েছে, চুরি যাওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার জন্য ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্ক-এর সঙ্গে চুক্তি হয়েছে যে, মামলার প্রথম থেকে শুরু করে প্রতিটা ডলার উদ্ধার পর্যন্ত তারা সঙ্গেই থাকবে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বলেন, ‘কতদিনের মধ্যে এ মামলার সুরাহা হতে পারে তা এখনি বলতে পারছি না, তবে অতি শীঘ্রইসম্ভব হতে পারে। নিউ ইয়র্ক-এর যেই কোর্টে এ মামলা করা হয়েছে, সেখানে সাধারণত দ্রুতই মামলা নিষ্পত্তি হয়। ফিলিপাইনে হলে অনেক বিলম্ব হতো। ওখানে অনেক দীর্ঘসূত্রতা আছে। নিউ ইয়র্ক-এ অনেক সুবিধা। আমরা আশা করছি, খুব বেশি সময় লাগবে না।’

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে সুইফট সিস্টেম ব্যবহার করে ৩৫টি ভুয়া বার্তা পাঠিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্ক (ফেড)-এরাখা বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়। এরমধ্যে একটি মেসেজের মাধ্যমে শ্রীলঙ্কায় একটি ‘ভুয়া’ এনজিওর নামে ২০ মিলিয়ন ডলার সরিয়ে নেওয়া হলেও বানান ভুলের কারণে সন্দেহ হওয়ায় শেষ মুহূর্তে তা আটকে যায়। বাকি চারটি মেসেজের মাধ্যমে ফিলিপাইনের মাকাতি শহরে রিজল কমার্শিয়াল ব্যাংকের জুপিটার স্ট্রিট শাখায় ‘ভুয়া তথ্য’ দিয়ে খোলা চারটি অ্যাকাউন্টে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার সরিয়ে নেওয়া হয়।অল্প সময়ের মধ্যেই ওই অর্থ ব্যাংক থেকে তুলে নেওয়া হয়। ফিলরেম মানি রেমিট্যান্স কোম্পানির মাধ্যমে স্থানীয় মুদ্রা পেসোর আকারে সেই অর্থ চলে যায় তিনটি ক্যাসিনোর কাছে। এরমধ্যে একটি ক্যাসিনোর মালিকের কাছ থেকে দেড় কোটি ডলার উদ্ধার করে বাংলাদেশ সরকারকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। জুয়ার টেবিলে হাতবদল হয়ে ওই টাকা শেষ পর্যন্ত কোথায় গেছে, তারও  হদিস চলছে।

গত বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) নিউ ইয়র্ক-এর ম্যানহাটন সাদার্ন ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে দায়ের করা মামলায় ফিলিপাইনের রিজল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশন (আরসিবিসি) এবং ওই ব্যাংকের বেশ কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তাসহ ডজন খানেক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।

চুরির অর্থ ফিলিপাইনের কোথায় কোথায় আছে, সে ব্যাপারে তথ্য আছে জানিয়ে ফজলে কবির বলেন, ‘ফিলিপাইনের বিভিন্ন জায়গায় এ অর্থ আছে। সেখানে তাদের সবাইকে দায়ী করে এই মামলা করা হয়েছে।’

বাংলাদেশের মামলাকে ভিত্তিহীন বলে আরসিবিসি কর্তৃপক্ষের বক্তব্যের প্রসঙ্গে ফজলে কবির বলেন, ‘আরসিবিসি একথা বললেও বুঝতে হবে যে, আরসিবিসির ওখানে সমস্ত টাকা গিয়েছিল। অর্থাৎ, ৮১ মিলিয়ন ডলার আরসিবিসিতেই গিয়েছিল এবং সেটি চারটি ভুয়া অ্যাকাউন্টেই গিয়েছিল, যে অ্যাকাউন্টগুলো বৈধ না। এ কাজের জন্য আরসিবিসিকে ওই দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের রেকর্ড সর্বোচ্চ পানিশমেন্ট দিয়েছে। তাদেরকে সাজা দিয়েছিল এক বিলিয়ন (১০০ কোটি) পেসো, অর্থাৎ ২১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এটা সঠিক ছিল না, এটা লন্ডার্ড মানি ছিল। এই কারণে তাদের শাস্তি দিয়েছিল। কাজেই আরসিবিসি এটা বললেই তো হবে না।’

একই রকম সংবাদ

বিজ্ঞাপনspot_img

সর্বশেষ খবর